এমপি পুত্র না হয়ে গরিবের পুত্র হলে জেল-জরিমানা দুটোই হতো

রাজধানীর মহাখালীর ফ্লাইওভারে গাড়িচাপায় পথচারী সেলিম ব্যাপারী নিহত হওয়ার ঘটনায় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেয়ার প্রস্তাব পেয়েছে নিহতের পরিবার।

শুক্রবার এমন একটি সংবাদ অমাদেরসময়.কম এর ফেসবুক পেজ-এ শেয়ার কারার পর অনেক পাঠক তাদের মতামত জানিয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনের মতামত তুলে ধরা হলো।সাব্বির লিখেছেন, টাকার কাছে যদি আইন বিক্রি হয়ে যায় তাহলে আইন রেখে লাভ কী? যে যার মত খুন করবে টাকা দিয়া মীমাংসা করে নিবে…?

রাসেল বিন নুর বলছেন, বিচারে ফাঁসি হলেই আর কি, বাংলাদেশের যে বিচার ব্যবস্থা এর থেকে ভালো ৩০ লাখ টাকা যদি গরিব পরিবারটা পায় তাও কিছু করে চলতে পারবে…..মো. মহিউদ্দিনের ভাষায়, আদালতের উচিত স্বপ্রণোদিত হয়ে আইনের আওতায় আনা, নাহলে ৩০ লাখ টাকায় মানুষ খুন বৈধতা পাবে!

সাহদাত হোসাইন লিখেছেন, এমপির পুত্র না হয়ে যদি গরিবের পুত্র হতো তাহলে জেল-জরিমানা দুটোই হতো। এখানেই প্রমাণ হলো আইন সবাইর জন্য সমান নয়।

খোরশেদ আলমের মনে করেন, পুলিশ তদন্তের নামে আসামি ধরবে না এরই ফাকে একটা সমঝোতা হবে, এমপির ছেলে বেঁচে যাবে, গরীব হলে ফাঁসি। এ দেশে আইনতো শুধু গরীবের বেলায়, একজন সাধারন গরীব বাস ড্রাইভার হলে এতক্ষনে বিচার রিমান্ড শুরু হয়ে যেত।

সাফিকুল ইসলমা বলছেন, হায়রে দেশ! টাকার কাছে জীবন মূল্যহীন!এম এস কাবির আহমেদের মতে, তার মানে এমপি পুত্রকে ত্রিশ লাখ টাকার বিনিময়ে মানুষ হত্যা করার লাইসেন্স দেওয়া হলো।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে এমপি পুত্র শাবাবের গাড়ির ধাক্কায় সেলিম ব্যাপারী নিহত হন। জানা গেছে, বেপরোয়া গতিতে আসা গাড়িটি প্রথমে ফ্লাইওভারে এক পথচারী পায়ের ওপর তুলে দেয়। তিনি (পথচারী) ওই গাড়ির বাম্পার ধরে ফেলেন। গাড়িটি ব্যাক গিয়ারে এসে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন। গতি বাড়িয়ে তিনি আবারও সামনের দিকে এগিয়ে যান। ওই পথচারী ছিটকে ফ্লাইওভারের গার্ডারে গিয়ে পড়েন। মুহূর্তেই মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ওই পথচারীর। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

সে সময় গাড়িটি দ্রুত মানিক মিয়া এভিনিউ হয়ে ৫ নম্বর ন্যাম ভবনে ঢুকে পড়ে। তাকে ধাওয়া করে যে কয়েকজন ন্যাম ভবনে ঢুকেছিলেন তারা তখনই নিশ্চিত হন গাড়ি চালক সাবাব চৌধুরী। তিনি সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্যানুযায়ী, ঘাতক গাড়িটি শাবাবের মা কামরুন নাহার শিউলির নামে নিবন্ধিত। তিনি কবিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান।ওই ঘটনায় কাফরুল থানায় গাড়ির নম্বর উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহত সেলিমের মেয়ের জামাই আরিফ ভূঁইয়া। তবে এখনো অভিযুক্ত শাবাব চৌধুরীকে গ্রেফতার ও ঘাতক গাড়িটি জব্দে কোনো অগ্রগতি নেই পুলিশের।

উৎসঃ আস